স্ট্রোক প্রতিরোধ করুন – স্ট্রোক প্রতিরোধেই নির্মূল হয়

Dr. Devi Prasad Shetty
Message From Dr. Devi Prasad Shetty
24/07/2017
Research Issues to get a Report on Medications
31/05/2019
Show all

স্ট্রোক প্রতিরোধ করুন – স্ট্রোক প্রতিরোধেই নির্মূল হয়

স্ট্রোক প্রতিরোধ করুন - স্ট্রোক প্রতিরোধেই নির্মূল হয়

স্ট্রোকঃ সাধারণত একটি রক্তবাহী নালী একটি ক্লট দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টির করলে স্ট্রোক হয়ে থাকে ।এইটা অক্সিজেন এবং পুষ্টির সরবরাহ বন্ধ করে,যা মস্তিষ্কের টিস্যুর ক্ষতি ঘটায়।

এক তৃতীয়াংশ স্ট্রোক খুব বিপজ্জনক ; মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মৃত্যুর হার ৫০%।স্ট্রোকের কারণে রক্তপাত ৪৮ ঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে চলতে থাকে, পরে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়। ৬০ বছরেরও বেশি বয়সের মানুষের মৃত্যুর জন্য দ্বিতীয় প্রধান কারণ হল স্ট্রোক, প্রতি ৬ জন ব্যক্তির মধ্যে ১ জনের মৃত্যুর কারণ স্ট্রোক । প্রতি বছর সারা বিশ্বের প্রায় ৬০ লাখ মানুষ স্ট্রোকের কারণে মারা যায় এবং এই সংখ্যাটি এইডস, ম্যালেরিয়া এবং টিবির কারণে মৃত্যুর মোট পরিমানের চেয়েও বেশি।

“স্ট্রোককে চিকিৎসা বিজ্ঞানে সেরেব্রোভাস্কুলার দুর্ঘটনাও বলা হয়।সেরেব্রাল অর্থ হল-মস্তিষ্কের, ভাস্কুলার অর্থ হল- রক্তবাহী নালী সংক্রান্ত। তাই মস্তিষ্কে রক্তবাহী নালীর যেকোনো ধরনের সমস্যা বা দুর্ঘটনাই হল স্ট্রোক।”

স্ট্রোকের ১০ কারণঃ

  1. উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ গ্রহণে অনিয়ম স্ট্রোকের প্রধান কারণ।
  2. হার্ট অ্যাটাক, অ্যাট্রিয়েল ফাইব্রিলেশন, ভালভ প্রতিস্থাপন, জন্মের পর হৃদ প্রোকোস্টের মধ্যে অস্বাভাবিক যোগাযোগের মতো হৃদরোগ।
  3. ধূমপান বা তামাক গ্রহণ।
  4. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।
  5. পারিবারিক ইতিহাস অর্থাৎ পরিবারের কারো আগে স্ট্রোক ছিলো কি না ? পুরুষ ও বৃদ্ধ বয়সের লোকদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।
  6. রক্তে অত্যধিক চর্বি, স্থূলতা, অত্যধিক কোমল পানীয় খাওয়া।
  7. অত্যধিক উত্তেজনা বা মানসিক চাপ।
  8. অনেকেই গর্ভনিরোধক পিলকে ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ।গর্ভাবস্থায় ইকল্যাম্পসিয়া নামক জটিলতা থাকলেও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  9. কিছু ঔষধ ব্যবহারের কারণে যেমন ওয়ারফারিন, অ্যাসপিরিন, ক্লপিডোগ্রেল ইত্যাদির জন্য রক্তের ক্লোটিংয়ের ক্ষমতা হ্রাস পায় যার ফলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে।
  10. মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রে রক্তপাতের হার বেশি হয়ে থাকে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রক্ত এক বা দুই মাসের মধ্যে শুকিয়ে যায়। মস্তিষ্কের একটি বড় অংশে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেলে রোগী খুব প্রারম্ভিক সময়ে মারা যেতে পারে। পাশাপাশি হৃদপিন্ডের ও ঘাড়ের ধমনীতে বাধা থাকলে ৫% থেকে ১৫% রোগীদের আবার এক বছরের মধ্যে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

হালকা স্ট্রোকে মানুষ ২৪ ঘন্টার মধ্যে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে।

প্রয়োজনীয় পরীক্ষাঃ

রুটিন পরীক্ষার পাশাপাশি প্রতিটি রোগীর মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান করতে হবে।

সিটি স্ক্যানে একটি স্থান সাদা দেখায় যদি সেখানে রক্তক্ষরণ হয় এবং অন্ধকার থাকে যদি রক্ত সঞ্চালন অবরুদ্ধ থাকে ।যদি পানি সংশ্লেষের কারণে আক্রান্ত অঞ্চলের আশেপাশের এলাকাটি ফুলে যায় তবে সেই জায়গাটিও অন্ধকার দেখায়। এই সংশ্লেষ মস্তিষ্কের উপর আরো চাপ ফেলে। আইসিকিমিক স্ট্রোকের প্রথম ছয় ঘন্টাকে হাইপার একিউট বলা হয়। এই সময়ে অনেক রোগীর সিটি স্ক্যানে কোন সমস্যা দেখা যায় না, এ ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান আবার করা হয়। মস্তিষ্কের এমআরআই করে আমরা স্ট্রোক এবং তার চিকিৎসা বিষয়ে খুব ভালো ধারণা পেতে পারি।

ঘাড়ের রক্তবাহী ধমনীগুলির ডপলার টেস্ট করে এই ধমনীগুলোতওতব্লক আছে কি না তা জানতে হবে এবং আমাদের হৃদপিন্ডের কার্যক্রম জানতে্ত একটি ইকোকার্ডিয়োগ্রাম করা উচিত। রক্ত জমাটবদ্ধতা হবার ক্ষমতাও পরীক্ষা করা উচিত। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে এনজিওগ্রাম ও করানো উচিৎ।

স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্ণয় করতে আমরা রক্তে চর্বি স্তর, রক্তের গ্লুকোজ স্তরের মতো কিছু চিহ্নিত বিষয় খুজতে পারি।

স্ট্রোকে সাধারণত মস্তিষ্কের নীচের বেসাল গ্যাংগিলা এবং থ্যালামাস নামে অংশটি বেশি আক্রান্ত হয়,মস্তিষ্কের বাকি অংশের যে কোনো অংশ আক্রান্ত হতে পারে।

মস্তিষ্কের প্রধান অংশে স্ট্রোক সবচেয়ে বিপজ্জনক কারণ কেন্দ্রে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রণ করা, রক্ত সঞ্চালন এবং মস্তিষ্কের সুরক্ষার অনুভূতি রয়েছে মস্তিষ্কের এই মূল অংশে।

কোন বিলম্ব ছাড়াই চিকিত্সা করা উচিত স্ট্রোক হলে আক্রান্ত অংশে অক্সিজেন এবং পুষ্টির সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রক্ত সঞ্চালন ২ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হলে, স্নায়ুতন্ত্র স্থায়ীভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।

আক্রান্ত এলাকার চারপাশে একটি ছায়ার আবরণ তৈরি হয়,প্রথম দিকে চিকিত্সা করা হলে আবরণটি সুরক্ষা করা যেতে পারে।

স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য আমাদের হাতের পাঁচটি আঙ্গুল উঠিয়ে ৩ বার হ্যাঁ এবং ২ বার না বলতে হবে নিম্নোক্ত উপায়েঃ

হ্যাঁ বলুন

  • নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। প্রতিদিন অন্তত ৪৫ মিনিট হাঁটা ।
  • হাসিখুশি থাকা।
  • উদ্বেগ, দুসচিন্তা থেকে সব সময় নিজেকে দূরে রাখা। না বলুন
  • ধূমপান, তামাক পান।
  • নেশাজাতীয় দ্রব্য ও অন্যান্য নেশার সামগ্রী।

একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য একটি সম্ভাব্য স্ট্রোক এড়াতে অপরিহার্য আমাদের ইচ্ছানুযায়ী যতটা গ্রহণ করা যায়ঃ

  • শাকসবজি
  • কম বা পরিমিত চাল,
  • পাঙ্গাস মাছ, চিংড়ি এবং কাঁকড়া ছাড়া অন্য যেকোন মাছ।
  • ডিমের সাদা অংশ,
  • মুরগি।